সৈকতে শান্তির খোঁজে
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি চট্টগ্রাম। এখানে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে ঘুমিয়ে থাকে শান্ত জলের হ্রদ, নদী বয়ে চলে তার আপন মনে। সীমানার ওপারে নীল আকাশ মিতালী করে হ্রদের সাথে, চুমু খায় পাহাড়ের বুকে। এখানে চলে পাহাড় নদী আর হ্রদের এক অপূর্ব মিলনমেলা। যেখানে প্রকৃতি কথা বলে কবিতার ভাষায়। নদীর বাঁকে বাঁকে বাতাস সুর তোলে আপন মনে, গায় সুন্দরের গান। মুগ্ধ নয়নে শুধু চেয়ে থাকতে হয়, চারপাশ যেন আঁকা কোন জল রঙের ছবি।
বলছিলাম সবুজের মাঝে হাজার রঙের প্রজাপতি খেলা করা আর রাতের আঁধারে লক্ষ কোটি জোনাকীর আলো জ্বেলে ঘুরে বেড়ানো সমুদ্র সৈকত পারকীর কথা।
স্থানীয় ভাষায় ‘পারকীর চর’ আর পর্যটনীয় ভাষায় ‘পারকী বীচ’ বা সৈকত। এটা মূলত কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। অর্থাৎ কর্ণফুলী নদীর মোহনার পশ্চিম তীরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং পূর্বদক্ষিণ তীরে পারকী সমুদ্র সৈকত। এটি চট্টগ্রাম জেলার আনোয়ার থানার অন্তর্গত একটি উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত। চট্টগ্রাম সার কারখানা ও কাফকো যাওয়ার পথ ধরে এই সৈকতে যেতে হয়।
চট্টগ্রাম শহর থেকে দৃষ্টিনন্দন এই বিচটির দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। তাই মাত্র এক ঘণ্টা সময়ের মাঝেই শহর থেকে চলে যাওয়া যায় এখানে। এজন্য চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দার বাস টার্মিনাল থেকে রাঙ্গাদিয়ার বাসে চড়ে বা রিজার্ভ সিএনজি অথবা ট্যাক্সিতে করেও পারকীতে যেতে পারবেন।
এটি মূলত কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। অর্থাৎ কর্ণফুলী নদীর মোহনার পশ্চিম তীরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং পূর্বদক্ষিণ তীরে এই পারকী সমুদ্র্র সৈকত। চট্টগ্রাম সার কারখানা ও কাফকো যাওয়ার পথ ধরে এই সৈকতে যেতে হয়। পারকী সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথে দেখা মেলে নয়নাভিরাম নানা দৃশ্য। আঁকা বাকা পথ ধরে বিচের পথে যাবার সময়ই দূরে ছোট ছোট পাহাড়ের দেখা মেলে। এছাড়া নদীর তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিঃ (সিইউএফএল) ও কাফকোর দৃশ্যও পর্যটকদের প্রাণ জুড়ায়। আর পারকী সৈকতে যাওয়ার পথে কর্ণফুলী নদীর ওপর নির্মিত ঝুলন্ত তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুটিও দেখবার মতো।
সৈকতে প্রবেশের পথেই সরু রাস্তার দু’পাশে সারি সারি গাছ, সবুজ প্রান্তর আর মাছের ঘের চোখে পড়বে। তাছাড়া এই বিচে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো অসংখ্য ঝাউ গাছ আর ঝাউবনও রয়েছে। এখানে হালকা জলখাবারের ব্যবস্থা ছাড়াও রয়েছে সৈকতে ঘোড়ায় চড়া, রাইডিং বোট, বসার জন্য বড় ছাতাসহ হেলানো চেয়ারের মতো বেশ কিছু ব্যবস্থা।
তবে অন্য যেকোনো সৈকতের মতো পারকীরও সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কিন্তু সমুদ্র নিজেই। একটানা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত এই সৈকতে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখা বা পড়ন্ত বিকেলে সৈকতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে হেঁটে বেড়ানোর আনন্দও তাই অতুলনীয়।
মূলত শীতকালে বঙ্গোপসাগরের সৌন্দর্য দেখতে পর্যটকদের ভিড় বেশি হলেও বছরের অন্য যেকোনো সময়েও নিরিবিলি সমুদ্রের সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে চাইলে হাতে কিছুটা সময় নিয়ে চলে যেতে পারেন দেশের অন্যতম বড় এই সমুদ্র সৈকতটিতে।